দিনটা শুরু হয়েছিল এক অদ্ভুত দ্বন্দ্বে-- আকাশে রোদের দাগ, তার ফাঁকফোকর দিয়ে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা। যেন কেউ একসাথে দুটো গল্প বলতে চাইছে-- একটা উজ্জ্বল, আরেকটা ভেজা, স্যাঁতসেঁতে।
প্রকৃতির এই অদ্ভুত খেলাটা অনেকটাই আমাদের জীবনের সাথে মিলে যায়। আমাদের ভেতর জীবনের শান্তি বেশিভাগ সময়েই নির্ভর করে কার ছায়া আমরা কাছে আসতে দিই তার ওপর। মানি আর না মানি, আমাদের আশেপাশের মানুষদের ছায়ার কারণেই আমাদের জীবনের আলোটা ঢাকা পড়ে যায় অধিকাংশ সময়।
কিছু মানুষ আছে--তাদের সংস্পর্শ আসার আগেই এখন বুঝে যাই, এরা আমার আলোটা চুরি করবে। এখন আর সেই অপেক্ষাটা করি না, দরজা বন্ধ করে দিই, পথ কেটে দিই, ডিরেক্ট ব্লক মেরে বসে থাকা। আলহামদুলিল্লাহ, এই কায়দাটা শিখতে,অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। উন্মাদের মত প্রতিটা মানুষ, প্রতিটা গল্পের হ্যাপি এন্ডিং টানবার চেষ্টা করার পাগলামিটা এখন আর করি না। এটা শিখে গেছি বলেই জীবন এখন অনেক হালকা, অনেক সুন্দর মনে হয়।তীব্র সংশয়ের বিষন্ন সুন্দর নয়, ঝকঝকে রোদের একান্ত-নির্দ্বিধাময় সুন্দর।
বিকেলে বৃষ্টি থেমে রোদ এলো, রোদের গায়ে তখনও ঝুলে ছিল ভেজা গন্ধ। বাসার নিচে পিচ্চিপাচ্চাগুলা ছপছপ করে লাফাচ্ছিলো পানিতে, কেউ কেউ কাপড় নিয়ে ছুঁটছে তারে টানাবে বলে। আমি চুপচাপ আমার অতি প্রাচীন, ভাঙাচোড়া বাড়ির ছাদে বসে রইলাম-- চায়ের ধোঁয়া, আকাশের রঙ, আর এক ধরনের অদ্ভুত কৃতজ্ঞতা নিয়ে।
দিনশেষে মনে হলো আজ কিছু ঘটেনি অথচ অনেক কিছু ঘটে গেছে, মনে মনে বললাম--
দেখো মেঘও আশীর্বাদ আলোও আশীর্বাদ

0 মন্তব্যসমূহ