নিউজ দেখলাম একটা মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যা করেছে। নতুন কোনো ঘটনা নয়। প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষা হবে। লাখ লাখ ছেলেমেয়ে এ+ পাবে আর মুদ্রার উল্টো পিঠে থাকা কিছু ছেলেমেয়ে অকৃতকার্য অথবা অপেক্ষাকৃত খারাপ ফলাফল করে আত্মহত্যা করবে। সমাজের অতি সাধারণ, মুখস্থ একটি চিত্র। তবু বাআঁলি জাতির এতে কোনোদিন টনক নড়বে না। একটা ছাত্র/ছাত্রী খারাপ রেজাল্ট করা মাত্রই পুরো সমাজ তার উপর চেপে বসবে। হাসাহাসি-গালিগালাজ-মার কোনো কিছুই বাদ যাবে না মেন্যু থেকে। ১৫-১৬ বছরের একটা স্রেফ বাচ্চা ছোকরা এই পাহাড়সম অপমান মাথায় নিয়ে কীভাবে টিকে থাকবে তার থোড়াই কেয়ার বাঙাল জাত করে।
আমরা হাসিমুখে একজন ঘুষখোর, সুদখোর অথবা এ জাতীয় চোরদের সাথে বসে চা খেতে পারি অবলীলায়, কিন্তু একটাবার পরীক্ষায় খারাপ করা ছাত্রের সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারি না, কাঁধে হাত রেখে নীরবে জানান দিতে পারি না--ব্যপার নাহ! যেন তারা এক ভয়ানক অপরাধী। এরশাদ শিকদার গোছের কেউ।অথচ পরীক্ষায় ভালো-খারাপ ফলাফল একটি অতি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ-ভারত ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও, কোনো সমাজে পরীক্ষার ফলাফলের জন্য কেউ আত্মহত্যা করেছে বলে কোনদিন শোনা যায় না। এর মানে এই না যে সব জাতি মূর্খ রয়ে গেছে আর আমরা সব বিদ্যার আটিঁ।
কেনো যেন এই এসএসসি, এইচএসসি নামক ফালতু গোছের পরীক্ষাগুলো আমাদের সমাজে এত বেশি মূল্যবান যে এর জন্য নিজের জীবনটাকে পর্যন্ত নির্মম ট্রেনের চাকার নিচে পিষে ফেলতে আমরা দ্বিধা করি না।
কেনো যেন এই এসএসসি, এইচএসসি নামক ফালতু গোছের পরীক্ষাগুলো আমাদের সমাজে এত বেশি মূল্যবান যে এর জন্য নিজের জীবনটাকে পর্যন্ত নির্মম ট্রেনের চাকার নিচে পিষে ফেলতে আমরা দ্বিধা করি না।
পরীক্ষার্থী পোলাপানদের বলতে চাই--
যেই মানুষদের কথা শুনে তোমরা এত ভয় পাচ্ছো, তারা কোনোদিনই তোমার পথটা হেঁটে দিবে না। তারা কোনোদিন তোমাদের প্রাপ্তি বা অপ্রাপ্তিতে শরীক হতে পারবে না। তারা কেবল মুখ ভেংচে চিরকাল নিজ জিভের কু-ব্যবহারই করে যাবে। মনে রাখা উচিত- কুকুরেরা ঘেউ ঘেউ করবেই, তাই বলে ক্যারাভান কখনো থেমে যায় না। সে চলবে নিজ গতিতেই।
যেই মানুষদের কথা শুনে তোমরা এত ভয় পাচ্ছো, তারা কোনোদিনই তোমার পথটা হেঁটে দিবে না। তারা কোনোদিন তোমাদের প্রাপ্তি বা অপ্রাপ্তিতে শরীক হতে পারবে না। তারা কেবল মুখ ভেংচে চিরকাল নিজ জিভের কু-ব্যবহারই করে যাবে। মনে রাখা উচিত- কুকুরেরা ঘেউ ঘেউ করবেই, তাই বলে ক্যারাভান কখনো থেমে যায় না। সে চলবে নিজ গতিতেই।
ফলাফল খারাপ করার পর জীবন থমকে গেছে, নি:শেষ হয়ে গেছে জাতীয় ধারণা জন্মানো স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্বাস করো, এই একটা পরীক্ষা সত্যিই তোমার এই মহান জীবনের কোনো কিছু শেষ করার ক্ষমতা রাখে না। তোমার জীবনটা শেষ করে থাকলে করতে পারো তুমি নিজে; নতুন করে উঠে দাঁড়াবার প্রচেষ্টা টা থামিয়ে দিয়ে। এই মানবজীবন এত তুচ্ছ নয় যে একটা মাত্র পরীক্ষাই এর গতিপথ থমকে দেবে। জীবনটা আনন্দের। শুধু কখনো কখনো একটু সময় লাগে হারিয়ে যাওয়া আনন্দটুকু ফিরে পেতে।
এ পৃথিবীর সবাই তোমার হাতটা ছেড়ে দিলেও যে মহান আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তোমাকে একা ছেড়ে দেবেন না কখনোই। শুধু দরকার লম্বা করে একটা শ্বাস নিয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া, আবার নতুন করে শুরু করার উদ্দীপনা নিজের মাঝে তৈরি করা। যে মহান রব তোমাকে ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন তিনি তোমাকে ভোলেননি এখনও। শুধু অপেক্ষা তার কাছে চাইবার। দু ফোঁটা চোখের জল তার সামনে সিজদায় ফেলেই দেখো, সফলতার প্রকৃত মালিক টা কে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন