বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮

তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে...




সবকিছুর একটা শেষ আছে। জন্মের, প্রাণের, যন্ত্রণার, কষ্ট-দু:খ কিংবা সম্পর্কের। কিছু সমাপ্তি খণ্ডিত; ভাঙাচোরা সাময়িক। আবার কিছু চিরকালীন।
শেষটা যে যত ভালোভাবে মেনে নিতে পারে। সে ততটা সুখী। কষ্টের সময়গুলোর একটা পর্যায় থাকে। প্রথমটা অতি ধারালো, তীক্ষ্ণ; বুকটাকে ফালাফালা করে ফেলবার জন্য যথেষ্ঠ। এরপর সময়ের ব্যবধানে এই তীক্ষ্ণ কষ্টের ফলাটাই ভোঁতা হয়ে মুড়ি-মুড়কি হয়ে যায়। ক্রম:শ....ক্রমশ....
দাঁতে দাঁত চেপে কেবল এর শুরুটা সামলে নিলেই হল। বাকিটা আপনা আপনি ই দৌড়াবে, জ্বালানিহীন।
আমার লেখাগুলোয় ইদানিং একটা আবেগী বোরনেস খুঁজে পাই। মানসিক ভাবে প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। নিজের লেখা দেখে নিজেরই জেদ চেপে যায়। আর লিখবো না হয়তো। লিখলেও দু:খ বিলাস আর হা-হুতাশ। কি লাভ!
অতি সুখেরও ক্লান্তি আছে, বিরক্তি আছে। অনন্তকালের জীবনে ক্লান্তি থাকবে না। স্বস্তিগুলো তখনকার জন্যই তোলা থাক। দুনিয়ার জীবনটায় খুব সচেতনভাবে একটা অর্থবহ জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম। ছেলেবেলায় পড়ে আসা 'অর্থই অনর্থের মূল' নামক ভাবসম্প্রসারণটার মতো অনর্থ হয়েই পড়ে রইলো জীবনটা। কাজের কাজ কিছুই কররা হয়ে ওঠেনি। ত্রিশ পায় ছুঁয়ে ফেললাম।
একজন নিখুঁত মানুষ হতে চেয়েছিলাম। হয়েছি খুঁতের গুদাম। শুধু দিনশেষে এতটুকুতেই প্রশান্তি পাই যে-- অনেস্ট তো ছিলাম জীবনটার প্রতি, সে ই বা কম কিসে?
এই পৃথিবীটা সৃষ্টিকর্তা ডিজাইন করেছেন পরিবর্তনশীল করে। সবকিছু বদলে যাবে, এটাই নিয়ম, এতেই কল্যান।
গাছের পাতা, ফুলের রঙ, মধুর সাধ, চোখের নিচের টানটান চামড়া কোনোকিছু ধ্রুবক নয়। ধ্রুবক নয় চাঁদ-সূর্যের গতিপথটা পর্যন্ত।
গতকালের তীব্র ভালোবাসার মানুষটা আজ অবলীলায় বলে বসতে পারে 'অসহ্য তুমি', সাফোকেটিং...
পরিবর্তনের সাথে গলায় গলা ভিজিয়ে মেনে নিতে শেখাতেই মানব জনমের আনন্দ, সফলতা। যে যত পরিবর্তনশীল, সে তত সুখী।
ভালো থাকুক পৃথিবীর মানুষগুলো। নিজেদের মত করে। অন্ততপক্ষে নিজের কাছে সৎ থেকে বেঁচে থাক অনেকক্ষণ....
একটা লাইন মাথায় অযথাই ঘুরঘুর করছে--
“তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে, তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে… ”

1 টি মন্তব্য:

  1. আমরা অতি আবেগীরা সহজে পরিবর্তন হতেও পারি না, মেনে নিতেও কষ্ট হয়। আমাদের ব্যার্থতা😢

    উত্তরমুছুন