মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮

উইথ গ্রেইট পাওয়ার, কামস গ্রেইট রেসপোনসেবিলিটি!





কোনো ঘটনা শোনা বা পড়ার সাথে সাথে সেটা ভিজুয়ালাইজ করতে পারার ক্ষমতা আমার বাড়াবাড়ি পর্যায়ের। চোখের
সামনে দৃশ্যগুলো টপাটপ কল্পনা করতে থাকি। অনেকটা থ্রিলার মুভির মত। সাঁই সাঁই...

সেদিন যখন জনৈকা ছাত্রনেত্রী অন্য এক ছাত্রীর পায়ের রগটা কচ করে ক্ষুর দিয়ে কেটে দিলেন তখন আমি গভীর
মনোযোগে দৃশ্য টা কল্পনা করার চেষ্টা করলাম-- আচ্ছা, কাটার সময় মেয়েটার মুখভঙ্গিটা কেমন ছিল? ব্লেড কিংবা
ক্ষুর দিয়ে মাখন কাটার মতো মাংস পোঁচ দিয়ে দুভাগ করার সময় ঠিক কতটা
ভয়ানক বুলি বের হচ্ছিলো তার মুখ
দিয়ে? ঠিক কতটুকু ঘৃণা আর হিংস্রতা নিয়ে একটা মানুষ এমন কাজ করতে পারে?

ভাবতে পারছিলাম না। আমি রক্ত ভয় পাই, গা গুলাচ্ছিলো। ক্ষমতার দম্ভে ঠিক কতটা অন্ধ হয়ে গেলে এমন করতে
পারে মানুষ? জানা নেই।
পৃথিবীর নিয়ম হচ্ছে সময়টা পাল্টাবেই। কখনও অতি দ্রুত আবার কখনও ভয়ানক স্থিরতায়। কিন্তু পাল্টাবেই। সে বাধ্য।
এর নিয়ন্ত্রক বড্ড বেশি কঠোর।
যে মানুষটা ঘন্টাখানেক আগে নির্মমভাবে অন্যের পায়ের রগ কাটতে পারে ঘন্টা পেরুতেই সেদিন অসহায় ভাবে সে
ক্ষমতা হারিয়ে বাঁচার আকুতি জানিয়ে জনে জনে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়েছিল। তার অসহায়ত্বের সে ভিডিও ভাইরাল হয়।
মানুষ হাঁসছিল, তালিয়া বাজাচ্ছিলো মজা দেখে। জুতার মালা পড়িয়ে রং তামাশা জমেছিলও বেশ। ঠিক যেন
বাজারে ঘটে যাওয়া বাদর নাচ!
ক্ষমতা কখনওই ধ্রুব নয়। এর ক্ষয় অনিবার্য। অসীম ক্ষমতাধর ফিরাউন, হিটলার, সাদ্দাম কিংবা সেদিনকার
গাদ্দাফি। কেউ পারেনি। কুত্তার বাচ্চার মতো মরতে হয়েছে রাস্তায় পড়ে পড়ে।

৭৫ এ অসীম ক্ষমতাবান রক্ষী বাহিনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর ঠিক পরদিন জানের ভিক্ষা চেয়ে মানুষের বাড়ী বাড়ী
ছুটে বেরিয়েছিলো একটু আশ্রয়ের খোঁজে। হুমায়ুন আহমেদের দেয়াল পড়লে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।
কেবল মাত্র একটা রাতের পার্থক্য। গতরাতে রাজপথে দাদাগিরি করে বেড়ানো রক্ষীবাহিনির সদস্যটাকে
পরদিন সকালে অপরের পা চেটে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে হয়েছিল। আমাদের ছাত্রলীগের ছাত্ররা(?) অন্তত তাদেরই
অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এই জুলুমটা থামাবেন আশা করি। না থামালেও সমস্যা নেই। খুব বেশি সময় আমাদের
কারও হাতেই বাকি নেই। নিশ্চই আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউ পালাতে পারব না।

যখন পেট্রোল আছে বুঝে খরচ করুন। যখন ক্ষমতা আছে সেটাও বুঝে শুনে খরচ করুন। ক্ষমতার উত্তম খরচ
মানুষকে অমর করতে না পারলেও বেইজ্জুতি থেকে অন্তত রক্ষা করতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন