বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০

কদর্য-ভাস্কর্য




ভাস্কর্য বানাবেন কি বানাবেন না সেই আলাপ করার আগে, বাংলাদেশের ভাস্করদের উচিত ভাস্কর্য জিনিসটা ঠিকঠাক বানাতে শেখা। বাংলাদেশে ভাস্কর্যের নামে যেসব কদর্য শ্রেণির বস্তু তৈরি করা হয় সেগুলাকে ভাস্কর্য না বলে ভাস্কদর্য ডাকাটাই উত্তম। 

বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে সবচাইতে বেশি যে মানুষটার তৈরি ভাস্কদর্য  দেখা যায় তার নাম মৃণাল হক। এই লোকটা ব্যপক চেতনাবাজি করে প্রচুর পয়সা বাগিয়ে এখানে সেখানে ইচ্ছামত মূর্তি তৈরি করে গেছেন তার মৃত্যুবধি। একবার কাওরান বাজার মোড়ে এই লোক একটা বাঘের মূর্তি বানালেন। বাঘের শরীরটা ছিল সাপের মত সরু আর চেহারা অবিকল রঙচং মাখানো মানুষের মত। বানানোর কয়েক দিনের মধ্যে এই বাঘ আবার এক ভ্যানওয়ালার মাথায় পড়ে ভ্যানওয়ালার মারা যান। আজ অবধি কোন বিচার হইনি এই অব্যবস্থাপনার। দায়ভার যায়নি কারও ওপরই।

ঢেকি স্বর্গে গেলেও নাকি ধান ভানে। মৃণাল সাহেব ঢেকি প্রজাতির মানুষ, তিনি এতেও থেমে যাননি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ লাখ টাকা চুক্তিতে তিনি বঙ্গবন্ধুর একটি মূর্তি তৈরি করলেন, যাতে এমনই নিম্ন মানের টাইলস আর পাথর ব্যবহার করেন যে ৫ মাসের এতেও ফাটল দেখা দেয়ায় সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও  পরবর্তীতে তিনি সোলাইমান সুখন সদৃশ শাহরুখ খান, হিরো আলম চেহারার মেসি ও পার্থ বড়ুয়া চেহারার রবীন্দ্রনাথ তৈরি করে ব্যপক হাউকাউ তুলে ফেলেন। 

আরেকজন আছে ভাস্কর রাশা। এই লোক কদিন আগে দেখলাম শাহরিয়ার কবিরের মূর্তি বানিয়ে শেখ মুজিবের নামে চালানোর চেষ্টা করছেন। বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে কত বড় অবমাননা। ছিহ! 

 মোদ্দাকথা হচ্ছে বাংলাদেশে রাজু ভাস্কর্য ব্যতিত আর একটাও নান্দনিক ভাস্কর্য নেই। এই কাজটা জাস্ট পারেন না বাংলাদেশের কেউ। এসকল কুৎসিত জিনিসগুলো আচমকা রাতের বেলা দেখলেও বুকের ভেতর চিপা দেয়। জ্বীনের মত, কুৎসিত এই জিনিসগুলো ভাস্করেরা বানান স্রেফ নিজেদের পকেট ভারী করার উদ্দেশ্যে। নান্দনিকতার যে গুণ বা প্রতিভা দরকার তার কোনটাই এই আহাম্মকদের নেই।

এই যে কুৎসিত সব জিনিস তৈরি করে সেগুলোকে আবার নান্দনিক স্থাপনা বলে প্রচার করেন, আবার এইগুলারে টিকায়ে রাখতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন- লজ্জা লাগে না?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন