শুক্রবার, ১৮ মার্চ, ২০২২

বোশেখের আনন্দ





এই ভারতবর্ষে পহেলা বৈশাখ কোনকালেই আনন্দময় কোন উৎসবের কোন দিন ছিল না। জমিদাররা এই দিনে পুণ্যাহ করতেন। পুণ্যাহ হচ্ছে জমিদারের খাজনা আদায়ের উৎসব। প্রজাদের পেটে পাড়া দিয়ে খাজনা আদায় করা হবে সেটা বোধ করি প্রজাদের জন্য সুখকর কিছু না। 

ওদিকে ব্যবসায়ীরা টান দিয়ে বের করতেন হালখাতা। সেখানেও সাধারণদের ভূমিকা হল বকেয়া টাকাপয়সা দেয়া। এটাও সাধারণ জনগণের জন্য আনন্দদায়ক কিছু না।

তাই নতুন বছর প্রজাদের মনে আনন্দ নিয়ে আসতো না। আনন্দ নিয়ে আসতো চোষা জমিদার রবী ঠাকুরদের মনে। এসো হে বৈশাখ বলে তাই বৈশাখ কে আমন্ত্রণ জানানোর যে নাটক সেটা তাই তাদেরই সাজে। আপনার আমার মত দরিদ্র চাষা-পোষাদের না।

বৈশাখ মাস উৎসবের জন্যও কোনো আদর্শ কিছু নয়। কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি, ঝড় তুফানের আশংকায় কৃষকদের দিন কাটে এসময়। ছন-বেড়ার তৈরি ঘরটা না জানি কোনদিন কোন দিকে উড়ে চলে যায়।  কৃষকদের কাজের চাপও প্রচণ্ড। নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই, উৎসব তো দূর কি বাত!

এদেশে বাংলা নববর্ষ পালনের ধারণাটা অন্যান্য ঢংগুলোর মতই পশ্চিম থেকে পাওয়া। তারা যেহেতু গু খেয়েছে, আমাদেরও খেতে হবে টাইপ ব্যাপার আরকি।

নববর্ষপালন শুরু হয়েছিলো পশ্চিমা মানসকিতার কিছু মানুষদের হাত ধরে, তাও একেবারেই ঘরোয়া ভঙ্গিতে। পঞ্চাশ দশকের দিকে কবি বেগম সুফিয়া কামালের তারাবাগের বাসভবনে পহেলা বৈশাখ পালিত হত। কবি জাহানারা আরজুর বাসভবন কবিতাঙ্গনেও বাংলা নববর্ষ বেশ ঘটা করে করা হত।

এই পঞ্চাশের গোড়ায় শুরু হওয়া, গরিবের পেটে লাথি দেয়ার একটা অনুষ্ঠান নাকি আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতি। হাজার বছর আগে তো শালার বাঙ্গাল জাতটাই ছিল না। তোদের আবার সংস্কৃতি কি রে? ইন্দুর-বান্দরের মুখোশ পড়ে নাচানাচি করতে করতে ইন্দুর-বান্দরের মত জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পাইলে তো সমস্যা...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন