মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭

হোলি হ্যায় !



একটা মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। 
হয়তো স্কুল বা অফিসের প্রতিদিনকার চেনা পথটাতেই। হঠাৎ! এদিক-ওদিক-সবদিক থেকে ছুটে এলো হাত। অনেকগুলো হাত। ছোট হাত। বড় হাত। লম্বা হাত। সফেদ হাত। কালো হাত। হাতগুলো যখন যেভাবে ইচ্ছে, যতক্ষণ ইচ্ছে হাতিয়ে নিলো মেয়েটার শরীর। নিজেকে বাঁচাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শেষ রক্ষার চেষ্টা চালালো মেয়েটা, তার চিকন-ক্লান্ত কন্ঠটা খানিক শব্দ করার চেষ্টাও হয়তো করলো; অনুনয় করে মাফ চাইলো- অফিস যাচ্ছি/ স্কুল যাচ্ছি, ভাইয়া, প্লিজ ছেড়ে দিন আমাকে!

কিন্তু কে শোনে কার কথা?

জলাতঙ্কের কুকুর আর নারীদেহের প্রতি তৃষ্ণার্ত পুরুষ সমগোত্রীয়। তারা চিৎকার করে উঠে। সমস্বরে! উল্লাসের চিৎকার, আনন্দের চিৎকার। বিজয়ের চিৎকার। একজন খুনি খুন করে এর পেছনে যেমন যুক্তি দাঁড় করায়। তেমনি একজন সেকুলাঙ্গার-সুশীলেরা এই গা হাতড়ানোর অনুষ্ঠানটাকে আদর করে ডাকে-- হোলি বা দোল উৎসব।
প্রতি বছর একটু একটু করে এই অনুষ্ঠানটার বেহায়াপনার মাত্রা বেড়েই চলছে। অবশ্যই অবশ্যই এর দ্বায়ভার আয়োজক/ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিতে হবে। আপনারা বলবেন আমরা এইসব করি না, বাইরের মুসলিমরা ই এসে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটায়। তাহলে প্রশ্ন হলো এসব অনুষ্ঠানে বাইরের মানুষকে আপনারা আসতে দিচ্ছেন কেন? আর আসতেই যখন দিচ্ছেন তখন খোলা রাস্তায় এসব করে জনজীবন স্থবির করার ক্ষমতাটা আপনাদের কে দিলো? আপনাদের মনে রঙ প্রচুর, আমরা তা জানি। তাই দয়া করে নিজ ঘরে বসে রঙয়ের কলসিতে গলা পর্যন্ত চুবিয়ে বসে থাকুন। অন্যের গায়ে জোর করে তার অনুমতি ব্যতিত হাত লাগানোটা এই মানবসমাজে অসভ্যতা। কুকুর সমাজের চিত্র ভিন্ন। বোধ করি সভ্যতা/অসভ্যতার পাঠ আপনাদের জীবনদর্শনেই খুঁজে পাওয়া যাবে।
যাবার আগে একটি ফুড ফর থট দেই-- 'মালাউন' শব্দটা জাস্ট মুখে উচ্চারণ করার ফলে বিচারবিভাগ সহ সমগ্র মিডিয়ায় হাউকাউ লেগে যেতে পারে; কিন্তু খোলা রাস্তায় একই দিনে একাধিক মেয়েকে জোরপূর্বক লাঞ্ছিত করলেও কেনো বিচারব্যবস্থা বা মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় তেমন কোনো হাউকাউ হয় না?
অবশ্যই এজাতীয় অনুষ্ঠান পাব্লিক প্লেস/ রাস্তা ইত্যাদি স্থানে বন্ধ করা উচিত। সীমার ফাজলামি বহু আগেই পার হয়ে গেছে।

ফুলস্টপ! ওভার এন্ড আউট