শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭

পকেট ভরা সুখ আমার





রাত ১২.৩০।

নগরীর ব্যস্ততম রাস্তাটা খুব আদুরে ধরণের চুপচাপে ব্যস্ত। অদ্ভুত নীরবতা সবখানে....
সারাদিনের ভিক্ষা শেষে ৭/৮ বছরের পথশিশুটা বন্ধ দোকানটার সিঁড়িতে বসা। একা!

ওপাশ থেকে বেলুনওয়ালার চিৎকার-- কিরে বাড়ি যাইবি না?
প্রচন্ড একা মেয়েটা তার ছলছলে চোখের ভাষায় শব্দহীন কোন একটা জবাব দেয়।

চোখের ভাষার জবাবটা বুঝে তার হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে হাতের কোল্ড কফিটাতে টান দিতে দিতে গুণগুনিয়ে ফিরতে লাগলো বেলুনওয়ালা। হয়তো নিজ বাড়ি।

ভালোবাসতে জানতে হয়। প্রচন্ড অসুন্দর এই পৃথিবীটায় অদ্ভুত সুন্দরেরা সবসময় লুকিয়ে থাকে অতি গোপনে। 

সারাদিনের খাঁটুনি শেষে ক'জন পারে বুক পকেট ভর্তি সুখ নিয়ে বাড়ি ফিরতে?

শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭

আত্মামৃত





গুগল সার্চ করলেই সবচেয়ে কাছের এটিএম বুথটার অবস্থান জানা যাবে। কিন্তু সার্চ করলেই জানা যাবে না সবচাইতে কাছের শিউলি ফুল গাছটার অবস্থান।
বস্তুগত আনন্দ লাভের হাহাকার এই দুনিয়াজুড়ে। শুধু আত্মিক আনন্দটার কোন ব্যবস্থা নেই। হালকা চোটে হাসপাতাল-ডাক্তার-নার্স সবকিছু ডেকে একাকার করে ফেলা যায়। কিন্তু বিষে-বেদনায় কারও ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে-মরে নি:শেষ হয়ে গেলেও সারাবার কোনো ব্যবস্থা নেই। হাসপাতাল নেই, ডাক্তার নেই....

প্রতিদিন মানুষ দেখি। মৃত মানুষ। দিব্যি খাচ্ছে-দাচ্ছে-ঘুমাচ্ছে।
কিন্তু ভেতরটা মরে গেছে; বহু আগে, বহুকাল আগে...

শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭

ঝিলমিলে মতিঝিলে...


মোগল সাম্রাজ্যের সময়ে মতিঝিল এলাকাটি মির্জা মোহাম্মদের মহল হিসাবে গণ্য হতো, যার মধ্যে ছিলো একটি ঝিল। শুরুতে সুকাকু মহলের ঝিল হিসাবে খ্যাত হলেও পরে এই ঝিলটি মতিঝিল নামে পরিচিত হয়ে উঠে, এবং এর নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয়।

মজার ব্যাপার হলো দেশ থেকে বহু হাতি-ঘোড়া বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এ ঝিলটির অস্তিত্ব এখনও রয়েছে। এক সময় এ ঝিলটি মুগদার মান্ডা এলাকার খালের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে একে নালা বললেও ভুল বলা হবে না। ছোট হতে হতে এর দৈর্ঘ্য বর্তমানে বড় জোর ৬০ থেকে ৭০ গজে এসে ঠেকেছে।

ছবিতে এই ঝিল নামের নালাটা দেখা যাচ্ছে...

বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

পদ্ম-মেস


ছোট ভাইয়ের মেস। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফেনা ভর্তি টুথপেস্ট মুখে নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে এরা শাপলা দেখে।

বাড়িওয়ালাদের মন তাদের বাড়ির বারান্দার পরিমাপের সমানুপাতিক। একটা কৃপণ বাড়ির বারান্দায় কখনো পা মেলে বসা যাবে না, উঠোনও থাকবে না; কেবল শিকহীন এক খাঁচায় মাথা গুঁজে বেঁচে থাকা....

এমন মেসে থাকতে পারাটা ভাগ্যি বলতে হবে...

শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭

আমার নাগরিক জোছনা





শহুরে চাঁদের মধ্যে মেকি মেকি একটা ভাব থাকে। ভাগ্য ভালো হলে এছাদ ওছাদের ফাঁক গলে উঁকি দিলে তার দেখা পেলেও পাওয়া যেতে পারে। আর দেখা গেলেও তেমন একটা আরাম নেই; টিউব লাইট আর জোছনার আলো পৃথক করাটা প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার।
শহুরে চাঁদ দেখলে আমার মনে হতে থাকে পাশের বাড়ির ৬ তলা ছাদটায় ডেকোরেটর ওয়ালারা বাঁশ দিয়ে বাতি জাতীয় কিছু একটা ঝুলিয়ে দিয়ে গেছেন। ও বাড়ির বিশেষ অনুষ্ঠানটা শেষ হলেই তড়িঘড়ি আবার খুলে নিয়ে চলে যাওয়া হবে ডেকোরেটর ওয়ালাদের ঠেলায় চড়িয়ে।